শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আরব-পারস্য যুদ্ধ কি আসন্ন

আরব-পারস্য যুদ্ধ কি আসন্ন

এখন বিশ্ব উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে কখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালায় এবং ইরান কিভাবে তা প্রতিহত করে। ইরাকে হামলার জন্য তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ‘গণবিধ্বসী অস্ত্র’ খুঁজে পেয়েছিলেন এবং তা আমেরিকার জন্য হুমকি ও অনিরাপত্তার কারণ ছিল বলে মিথ্যা প্রচার করেছেন! বুশ-ব্লেয়ার-কলিন পাওয়েলের এমন এক নির্জলা মিথ্যা এখনো মিথ্যাই রয়ে গেছে। এবার ইরান আক্রমণের জন্য অনেক কারণ ঘষামাজা করে তৈরি করা হয়েছে। যেমন ইরানের সেনাবাহিনী ‘সন্ত্রাসী’, আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা পশ্চিমাদের ‘পবিত্র দায়িত্ব’। ইরানের জ্বালানি তেলের ওপর অবরোধ। তেল বিক্রি করতে গেলেই ধড়পাকড় শুরু হবে। ক্রেতারাও বিব্রত। তুরস্ক পর্যন্ত তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ইরান থেকে। ইরানের ঘরের পাশে হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্ব শক্তিগুলো অবাধে জাহাজ চালাতে চায়। ইরান বাধা দিলেই যুদ্ধ শুরু হতে পারে। লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক ও আফগানিস্তানে ইরান ‘মুরব্বির সাথে বেয়াদবি’ করছে। সুতরাং তাকে শায়েস্তা করতে হবে। ফলে ছুতোর কোনো অভাব নেই। এখন সম্মুখ যুদ্ধটা বাকি। ছায়াযুদ্ধ শুরু হয়েছে দশক আগেই। ইরানের চার দিকে আমেরিকার সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী রণকৌশল রচনা করে চলেছে।

অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্লেষক বলছেন ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্র একাকী যুদ্ধ করে না; সঙ্গী সাথী নিয়ে যুদ্ধ করে। উত্তর কোরিয়া হামলার জন্য জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রস্তুত করা হয়েছিল। সিরিয়ার ক্ষেত্রে ইসরাইল ও ফ্রান্সসহ কয়েকটি আরব দেশ রয়েছে। আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনী রয়েছে। মুসলিম বিশ্বে বিবদমান দেশগুলোকে ব্যবহার করার অপকৌশল পুরনো। ইতোমধ্যে দুর্বল অর্থনীতির ব্রিটেন ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইরান যুদ্ধে আমেরিকার পাশে থাকবে। ফ্রান্স এ জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়ার ঘোষণা দেয়া বাকি। আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে চারটি কার্গো জাহাজে চোরাগোপ্তা হামলার জন্য সৌদি আরব, আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তবে অনেকে মনে করেন, এটি একটি বড় মিথ্যাচার।

তথাপি ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরব ও আমিরাত বিমানবাহী জাহাজ, মিসাইলবাহী জাহাজ, আক্রমণ জাহাজ, যুদ্ধবিমান বহর যেখানে বিশ্বের সেরা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান রয়েছে, বি৫২ বোমারু বিমান, ১০০০ জনের হাসপাতাল জাহাজ এতদঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। এর কারণস্বরূপ বলা হয়েছে, তাদের ইন্টেলিজেন্স খবর পাঠিয়েছে যে, ইরান আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে! বিশ্ববাসী বিশ্বাস না করলেও এ কথাগুলোই প্রচার করা হচ্ছে। একজন ইসরাইলি কলামিস্ট হারেৎজ পত্রিকায় লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিনিরা চুপচাপ থাকলে আমরা ডাণ্ডাপেটা করি। তখন ওরা বিক্ষোভ করে, পাথর ছোড়ে। তখন আমরা বোমা মারি, ধরে হাজতে পুরি। এটা চলতেই থাকে।’ ইরানেও তা দেখা যাচ্ছে। ইরানের বেলায় যে সমস্যাটি দীর্ঘ দিন ধরে তৈরি করা হচ্ছে, তা অস্ত্র ও যুদ্ধের চেয়েও মারাত্মক। তা হলো পারস্য জাতীয়তাবাদ ও আরব জাতীয়তাবাদের লড়াই। এ ইস্যু সম্মুখে ঠেলে দেয়া গেলে মধ্যপ্রাচ্যে আত্মঘাতী যুদ্ধ শুরু হবে, যার পরিসমাপ্তি ঘটবে ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে।

ইরান থেকে যেসব দেশ তেল আমদানি করে তাদের বলা হয়েছে সৌদি আরব থেকে তেল কেনার জন্য। ইরাককে বলা হয়েছে ইরান থেকে সর্ববিষয়ে দূরে থাকতে নতুবা নিজের পরিণতি বুঝে নিতে। কিন্তু এতবড় প্রস্তুতির দরকার কী? লিবিয়া থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত সর্বাগ্রাসী যুদ্ধ, সুদানের ক্যু ও সিরিয়া পরিস্থিতিসহ সব কিছুতে এখন দেখা যাচ্ছে আরব বিশ্বের দুই ক্ষমতাধর প্রিন্স জড়িত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রিন্স সালমান বলেছেন, আমাদের কি শিয়াদের ভ্রান্ত মতবাদ বিশ্বাস করতে হবে? ইরান বলেছে, মক্কা মদিনা ছাড়া সব কিছু এমনভাবে তছনছ করে দেয়া হবে যে, কাউকে ফোন করারও সময় পাওয়া যাবে না। এসব বিষয়, ইরান ও আরব বিশ্বের সঙ্ঘাতকে নির্দেশ করে। শিয়া বনাম সুন্নি মতবিরোধ চলছে বহু শতাব্দী ধরে। অতীতে কোনো কোনো সময় তা সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। এখনো এরূপ যুদ্ধ শুরু করানো তেমন কঠিন নয়। ইসরাইল ও পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ মুসলমানদের এসব পরিণতিতে আনন্দ অনুভব করে।

ইরাক ও সিরিয়ার ধ্বংসাবশেষের ওপর দাঁড়িয়ে আমেরিকা-ইসরাইল-যুক্তরাজ্য চক্র ইরানি জাতীয়তাবাদ ও আরব জাতীয়তাবাদের মধ্যে সঙ্কট সৃষ্টি করে চলছে বহুদিন ধরে। ওদের আশা, ইরান-সৌদি আরব মুখোমুখি হলে মুসলিম বিশ্ব বিভক্ত হয়ে চরম ধ্বংসের গহ্বরে পড়ে নিঃশেষ হবে।

আমেরিকার দক্ষিণপন্থী নিউকন, সৌদি আরব ও আমিরাতের প্ররোচনা এই সঙ্কটের এক বড় নিয়ামক হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ভিন্ন চিন্তাভাবনা রয়েছে পুরো এলাকাকে ধ্বংস করে দেয়ার। মুসলমানদের শক্তিকে সুযোগ বুঝে নস্যাৎ করে দেয়া সম্ভব হলে পশ্চিমা বিশ্ব আরো শক্তভাবে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যা হোক, অবরোধ কার্যকর করে ইরানকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দেয়াই এখন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য। আসন্ন যুদ্ধে ইরাকের মতো হামলা না-ও হতে পারে। উপসাগরীয় এলাকায় ইরানের কর্তৃত্ব দুর্বল করে দেয়ার জন্য ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরে কাজ করেছে। কার্যত ইরান দুর্বল হয়নি বরং প্রতিপক্ষ দুর্বল হয়েছে।

জানা গেছে, উপসাগরীয় এলাকায় ১২০০০০ হাজার সেনা পাঠানো হবে। গত কয়েক দিনে ১০ হাজার সেনা কৌশলগত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। পেন্টাগন আরো ডজনখানেক সৈন্যদল উপসাগরীয় এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর তাগিদ দিয়েছে। অপর দিকে রয়টারের খবরে প্রকাশ, বিভিন্ন স্থানে ইরান সমর্থিত ফোর্স ও ইরানি সেনারা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের স্থাপনাগুলোকে হামলার পাল্লায় নিয়ে এসেছে। তা ছাড়া, ইরান যেকোনো সময় হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিয়ে জ্বালানি সরবরাহ লাইন রোধ করে বিপর্যয় ঘটাতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন ব্যাপক যুদ্ধের পরিবর্তে ইরানের অভ্যন্তরে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে বিশেষ করে পরমাণু স্থাপনা এলাকায় ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করা হতে পারে। তবে হামলা হলেই ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেনের ইরানপন্থী যোদ্ধা গ্রুপগুলো যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও আমিরাতের স্থাপনার ওপর আক্রমণ চালাবে। যদি এমনই হয় অন্য মুসলিম দেশগুলোইবা কী করবে? এর মধ্যেই সৌদি আরবের নেতৃত্বে, মুসলিম দেশগুলোর সেনাবাহিনী নিয়ে আরব বাহিনী, আরব ন্যাটো নামে সেনাজোট তৈরি হয়ে আছে, যদিও সেটি তেমন শক্তিশালী হতে পারেনি। ট্রাম্প সৌদি আরব সফরের সময় এমন এক বাহিনীর কথা বলেছিলেন। এর নেতৃত্ব দেবে সৌদি আরব! যারা যুদ্ধ প্রতিহত করে বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দান করবেন তারাই এখন গৃহযুদ্ধের হোতা! আজকের পরিস্থিতি এমনই। যদি ঘুরিয়ে বলতে হয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্দেশিত ‘ইভানজেলিস্ট ক্রুসেডের’ সম্ভাব্য রূপায়নে দুই আরব প্রিন্সই যেন অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন। বাহরাইন, আমিরাত, জেদ্দা ও নাজরান যদি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয় তবে ‘গ্রেট ইসরাইল’ প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।

অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধও এক ধরনের আরব পারস্য যুদ্ধ। এতে আরবরা পরাজিত হয়। সিরিয়ার যুদ্ধও ‘আরব ও পারস্যের যুদ্ধ’। বাস্তবে ইরান একমাত্র মুসলিম দেশ যে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ করতে পারে। মুসলিম বিশ্বে ইরান, তুরস্ক ও পাকিস্তান এখনো বড় শক্তি। তাই এসব দেশের জন্য ভবিষ্যতে নানা সমস্যা অপেক্ষা করছে। এ সবই মুসলিম বিশ্বের ক্ষতি। এ জন্য কোন দেশ দায়ী? সচেতন পাঠক তা বুঝতে পারবেন। আরব নেতাদেরও তা বুঝতে হবে। আরেকটি আরব-পারস্য ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই লাগাম টানতে হবে। আরব দেশগুলোতে কোনো যুদ্ধ শুরু হলে তা আর থামে না। তেমন কোনো যুদ্ধ যদি আবার আরম্ভ হয় তবে সব কিছু ধ্বংস করে ছাড়বে। এতে কার লাভ? আরব নেতাদের রাজনৈতিক অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পেতে হবে, তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সৌদি আরব যেন সাজানো ফাঁদে পা না দেয়। যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের জন্য ইতোমধ্যে লাখ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। অথচ এই টাকা দিয়ে ইয়েমেনের দুর্ভিক্ষ দূর এবং সিরিয়ায় শরণার্থী পুনর্বাসন সম্পন্ন করা যায়।

১২ মে ট্যাংকারে হামলার দুই দিন পর সৌদি আরবের অভ্যন্তরে পাম্প স্টেশনে ড্রোন হামলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি বেশি না হলেও বোঝা যায়, সৌদি আরবের অভ্যন্তরে আরো ব্যাপকভিত্তিক আক্রমণ চালানো হতে পারে। এরই মধ্যে ইয়েমেনের হাউছিরা এই আক্রমণ চালানোর দায় স্বীকার করেছে। এদিকে আমিরাত কথা তুলেছে, উপসাগরের ৩টি দ্বীপ আবু মুসা, বড় তুম্ব ও ছোট তুম্ব ইরান অবৈধভাবে দখল করে আছে। কিন্তু কেউ বলছে না কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইয়েমেনের সকোত্রা দ্বীপ কেন আমিরাত দখল করে নিলো? এসব থেকে মনে হয়, ইরান-আরব বিরোধ ‘ফ্রন্ট লাইনে’ চলে এসেছে।

যুদ্ধ শুরু হোক বা না হোক তখন যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েনের খরচের বিল মূলত সৌদি আরব ও আমিরাতকে পরিশোধ করতে হবে। তা ছাড়া সুযোগ পেলেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সৌদির টাকা আছে তাই তাদের খরচ দেয়া উচিত। কিন্তু নিরাপত্তার এই খরচ অনেক বেশি। বর্তমানে সামরিক খরচের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর সৌদি আরব বিশ্বে তৃতীয় স্থানে। নিরাপত্তার জন্য এত খরচের পরও সৌদি আরবের অভ্যন্তরে ড্রোন ও মিসাইল হামলা রয়েছে অব্যাহত। আমিরাত ও সৌদি আরবের উন্নত ও অত্যাধুনিক অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও ইয়েমেন যুদ্ধে বোমা মেরে তছনছ ও ধ্বংস করা ছাড়া তারা কোনো কৌশলগত অর্জন করতে পারেনি, অথচ প্রতিপক্ষ হাউছিদের কোনো বিমান বা উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি নেই। ইয়েমেনের লোকজন প্রাণ বাঁচাতে এখন গাছের পাতা ভক্ষণ করতে বাধ্য হচ্ছে। হাজার হাজার শিশু মারা যাচ্ছে। এরা তো আরব-সন্তান! ইরান যেভাবে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামরিক ইন্ডাস্ট্রির উৎকর্ষ সাধন করেছে আমিরাত ও সৌদি আরব তার ধারে কাছেও নেই। মিসরসহ কোনো কোনো দেশের সৈন্যরা ইরানের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে হয়তো। তবে ইরান বুহ্য রচনার যে কৌশল রপ্ত করেছে তার সাথে পাল্লা দিতে সক্ষম হবে না। বরং সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ।

গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে, সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ এড়াতে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র হচ্ছে ইরাক। এবারো যুদ্ধ হলে ইরাক একটি বড় সেক্টরে পরিণত হবে। এ দেশে ইরানের বড় প্রভাব রয়েছে। ইরাকের অনেক শিয়া, সুন্নি, খ্রিষ্টান ও কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করে তেহরান। তাদের সংগঠিত হওয়া থেকে শুরু করে তহবিল ও অস্ত্র সহযোগিতাও ইরান করে থাকে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও ইরাক সফরের সময় যুদ্ধ এড়াতে আলোচনার কার্ড ফেলেছেন বলে জানা যায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ইরাকের ভেতর কোনো মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানা হলে ইরানের ভেতরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হবে। ইরান মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালাতে মিলিশিয়াদের কাছে স্বল্প-পাল্লার রকেট হস্তান্তর করেছে। ইরাকে ১০ হাজারের মতো মার্কিন সেনা রয়েছে। বিশ্বের বড় কনস্যুলেট স্থাপন করা হচ্ছে ইরাকি কুর্দিস্থানে। ইরাক ও কুর্দিস্থান নিয়ে আমেরিকার মিশন চূড়ান্ত রূপ লাভ করার আগেই ইরান হামলা করলে সব মার্কিন পরিকল্পনা ভণ্ডুল হবে। পম্পেওর তা না বোঝার কথা নয়।

ঝটিকা যুদ্ধের মাধ্যমে আমিরাত ও সৌদি আরব কোনো বিজয় নিয়ে আসতে পারবে বলে মনে হয় না। বরং ইরানের সাথে জরুরি বোঝাপড়া ও আলোচনা করে বিরোধের অবসান করা দরকার। অস্ত্রের পরিবর্তে রাজনৈতিক কার্ড এখন জরুরি। জিসিসির অন্য সদস্যরা যেমন- ওমান, কুয়েত ও কাতার কোনো যুদ্ধ চাইবে না। কাতারের অবস্থাও সঙ্গীন। প্রয়োজনে কাতারে অবস্থিত মার্কিন সৈন্যরাই কাতারি শাসক বংশের পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারে। আরব জাতীয়তাবাদী যুদ্ধ শুরু হলে মিসরও জড়িয়ে পড়বে। মুসলিম উম্মাহর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচার জন্য এখনই সৌদি আরব ও আমিরাতের রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়া উচিত। কেননা শান্তি রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় নিহিত, যুদ্ধে নয়।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877